কুমিল্লা
রবিবার,৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৫ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭
শিরোনাম:
খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় কুমিল্লায় ধারাবাহিক কুরআন খতম ও দোয়া কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন কাল, আসবেন ৫ দেশের ক্বারী যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন : হাসনাত খালেদা জিয়ার জানের সদকা ১৬টি ছাগল দান করলেন হাজী ইয়াছিন হাজী ইয়াছিনের দোয়ার আয়োজনে নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ভিক্টোরিয়া কলেজে রবীন্দ্র–নজরুল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ১৭ বছর কে কোথায় ছিল, আমরা দেখেছি: হাসনাত কুমিল্লায় ‘কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ পদ্ধতিতে অ্যাগ্রোইকোলজি উন্নয়ন’ কর্মশালা নাঙ্গলকোটে নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিজা আক্তারের যোগদান নাঙ্গলকোটে জামায়াতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ওষধ বিতরণ

দেবিদ্বারে খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক

খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। ছবিটি উপজেলার গোপালনগর থেকে তোলা। ছবি: নতুন কুমিল্লা

দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশত খাল এখন বিলীনের পথে। খাল ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে এ অঞ্চলে। এসব খালের বিভিন্ন স্থান দখল করে দোকানপাট, বাড়িঘর, টয়লেট, মৎস খামার, পোল্ট্রি, বাড়ির রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।

কিছু কিছু জায়গায় স্থাপনার নির্মাণ কাজ এখনও চলছে। খালগুলো ভরাট করার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ, কৃষক হারাচ্ছে হাজার হাজার একর জমির ফসল, বর্ষ মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের নেই কোন ব্যবস্থা। জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে উপচে পড়ে পানি ঘরবাড়িতেও প্রবেশ করে।

জীববৈচিত্র ও পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা এবং জলাবদ্ধতা নিরসন নদী-খাল, দীঘি, পুকুর, নালা জলাশয় ভরাট ও দখল বন্ধে এবং দখলকৃত সরকারী সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসনের তেমন দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেবিদ্বার উপজেলার ভানী, এলাহাবাদ, রসুলপুর, গোপালনগর, গুনাইঘর দক্ষিণ, করুইন-তালতলা, এগারোগ্রাম, উজানীজোড়া, উজানীকান্দি, ধামতী, ফতেহাবাদ মোকামবাড়িসহ শতাধিক স্থানে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী কর্তারা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।

এলাহাবাদ পশ্চিম পাড়া বাইশাগাজীর বাড়ি, সরকার বাড়ি হয়ে ঈসামুদ্দিন হাজী বাড়ির পাশ্ববর্তী খালটি এখন আর দৃশ্যমান নেই। যে যার মত করে খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। দখলকারীদের সাথে কথা বললে তারা খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণের কথা স্বীকার করেন।

এদিকে উজানীজোড়া গ্রামের প্রিন্সিপাল মো. সফিকুল ইসলাম’র বিরুদ্ধে খাল ভরাট করে তাঁর পিতা মৃত আবদুল ওয়াহেদ মোল্লার কবর, বাগান বাড়ী ও নিজের আস্তানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ রয়েছে।

নতুন কুমিল্লার অনুসন্ধানে দেখা যায়, গোপালনগর এলাকার একাধিক স্থানে খাল ভরাট করে বাড়ি ও দেয়াল, বর্জ্যরে টাংকি নির্মাণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, এলহাবাদ পশ্চিমপাড়ায় মৃত মমতাজ উদ্দিনের দুই ছেলে আবু সাঈদ ও সজিব মিয়া খাল ভরাট করে বাড়ির রাস্তা নির্মাণ করেন। ঈসামুদ্দিন হাজি বাড়ি, মুন্সি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানের দুই পাশে খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। একই এলাকার জাকির মুন্সি খাল ভরাট করে বাড়ির জায়গা ভরাট করেন এবং পাশে একটি পোল্ট্রি ফার্ম নির্মাণ করেন।

এলাহাবাদ সরকার বাড়ির আবুল হাশেম সামনে খালটির পাড় থেকে ৩লক্ষ টাকা খরচে লম্বা করে প্রায় ১০/১২ ফুট উচু করে রডের পিলার করেছেন যেকোন সময় ঢালাই হবে। খালের পাড়ের অংশে মাটিও ভরাট হয়েছে।

খাল ভরাটের ফলে এলাকায় জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করেছে। শুধুমাত্র উপজেলার গুনাইঘর (দ.) ইউনিয়নের উজানীকান্দি গ্রামে সড়কের দু’পাশের মাঠের ৩শত একর জমির ফসল বিগত ৮/১০ বছর ধরে কৃষকরা ঘরে তুলতে পারছেন না। সামান্য বৃষ্টিতে ফসলের মাঠ তলিয়ে যায়।

এতে ফসলী জমির মালিক, বন্ধকী ও বর্গা চাষিরা মানবেতর জীবন যাপন করে আসছে। প্রতিকার চেয়ে গত কয়েক বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ প্রদানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোন প্রতিকার পায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র চাকমা নতুন কুমিল্লাকে বলেন, পর্যায়ক্রমে দখলকৃত সব খাল উদ্ধার করা হবে। ইতোমধ্যে যারা অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হবে তিনি জানান।

(নতুন কুমিল্লা/জেপি/এসএম/০৩ জুলাই ২০১৮)

আরও পড়ুন