কুমিল্লা
শুক্রবার,৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৩ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭
শিরোনাম:
কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন কাল, আসবেন ৫ দেশের ক্বারী যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন : হাসনাত খালেদা জিয়ার জানের সদকা ১৬টি ছাগল দান করলেন হাজী ইয়াছিন হাজী ইয়াছিনের দোয়ার আয়োজনে নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ভিক্টোরিয়া কলেজে রবীন্দ্র–নজরুল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ১৭ বছর কে কোথায় ছিল, আমরা দেখেছি: হাসনাত কুমিল্লায় ‘কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ পদ্ধতিতে অ্যাগ্রোইকোলজি উন্নয়ন’ কর্মশালা নাঙ্গলকোটে নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিজা আক্তারের যোগদান নাঙ্গলকোটে জামায়াতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ওষধ বিতরণ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কুবিতে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল

কুমিল্লায় বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ ঐতিহ্য লাঙ্গল-জোয়াল

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশে প্রায় ৮০ ভাগ লোক কৃষক। এক সময় কৃষি কাজে কামারের তৈরি এক টুকরো লোহার পাত দিয়ে কাঠমিস্ত্রির হাতে তৈরি কাঠের লাঙল, জোয়াল আর বাঁশের তৈরি মই ব্যবহার করে জমির চাষাবাদ করতেন।

বর্তমানে কুমিল্লায় এর চিত্র একেবারেই অভিন্ন। এক সময় এখানকার বিল ও গ্রামীণ পলিবাহিত উর্বর এই জনপদের মানুষদের কাক ডাকা ভোরে ঘুম ভাঙত লাঙল জোয়াল আর হালের গরুর মুখ দেখে।

এখন অধুনিক যন্ত্রের আধিপত্যে সেই জনপদের মানুষদের ঘুম ভাঙে ট্রাক্টরের শব্দে। জমিতে বীজ বপন অথবা চারা রোপণের জন্য জমির মাটি চাষার ক্ষেত্রে হাল ব্যবহার করে আর ওই মাটি সমান করার জন্য মই ব্যবহার করা হতো। কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হতো অন্যতম পুরনো যন্ত্র।

এই কৃষিজমি আবাদের উপযোগী করার জন্য ষাঁড়, মহিষ প্রয়োজন হতো। লাঙল দিয়ে হালচাষ করতে কমপক্ষে একজন লোক ও এক জোড়া গরু অথবা মহিষ প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লাঙল জোয়াল, মই, গরু ও মহিষ।

এক সময় প্রায় প্রতিটি বাড়ির প্রতিটি ঘরেই ছিল গরুর লালন-পালন। গরুগুলো যেন পরিবারের এক একটা সদস্যের মতো ছিল। তাদের দিয়ে একের পর এক ভ‚মি চাষ করার কাজে ব্যবহার করা হতো। তাজা ঘাস আর ভাতের মাড়, খৈলের ভুসি ও খড় ইত্যাদি খাইয়ে হালের জোড়া বলদ দিয়ে জমি চাষ করে বেড়াতেন কৃষক।

গ্রামীণ জনপদে থাকা জমিগুলোতে এই চাষাবাদ করা হতো। হালচাষের জন্য ‘প্রশিক্ষিত’ জোড়া বলদের মালিককে সিরিয়াল দিতে হতো জমি চাষ করে দেয়ার জন্য। চাষের মৌসুমে তাদের কদর ছিল অনেক। অনেকের জীবনের সিংহভাগ সময় কেটেছে চাষের লাঙল জোয়াল আর গরুর পালের সঙ্গে।

বর্তমান সময়ে ট্রাক্টরের দাপটে এখন আর গরু দিয়ে হালচাষ হয় না বললেই চলে। গ্রামীণ সমাজের অনেকেই এখন হাল চাষের গরু পালন করা ছেড়ে দিয়েছেন। গরু দিয়ে হালচাষের উপকারিতা: গরু দিয়ে হালচাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো, হালচাষ করার সময় গরুর গোবর সেই জমিতেই পড়ত। এতে করে জমিতে অনেক জৈব সার হতো, এ জন্য ফসলও ভালো হতো।

গরু দিয়ে হালচাষ করে মাটির গভীরে গিয়ে মাটি তুলে উল্টে রাখার সুফল পাওয়া যেত। তবে মানুষের অভাবে কম সময়ে জমি চাষ করতে গিয়ে পাওয়ার টিলার ব্যবহার হচ্ছে। পাওয়ার ট্রাক্টর মাটির গভীরে যেতে পারে। এটি দিয়ে জমি চাষ করা ভালো এবং আগের তুলনায় এখন ফসলের ভালো ফলন হচ্ছে।

কৃষকরাও তাই এদিকে ঝুঁকছে। ফলে বিত্তবান কৃষকরা ওই যন্ত্র কিনে মজুরের ভূমিকায় কাজ করলেও গ্রামের অধিকাংশ মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও দিনমজুরের জীবন থেকে ওই সব ঐতিহ্যময় স্মরণীয় দিন চিরতরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আগের গ্রাম বাংলার চিত্রগুলো কতই না সুন্দর ছিল।

আরও পড়ুন