কুমিল্লা নগরীর প্রধান দুটি সড়কে একই সময়ে কাছাকাছি স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে নগরীর কান্দিপাড় এলাকাসহ পুরো নগরজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ ও অ্যাম্বুলেন্সকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেল তিনটায় নগরীর প্রাণকেন্দ্র পূবালী চত্বর ও লিবার্টি চত্বর এলাকায় পৃথক দুইটি সমাবেশের আয়োজন করেন তারা।
জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। একই সময় চেয়ারপার্সনের অপর উপদেষ্টা, কুমিল্লা-৬ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত মনিরুল হক চৌধুরী আয়োজন করেন গণসমাবেশ।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০ গজ দূরত্বে দুই সমাবেশের আয়োজন করায় নগরীর কান্দিপাড় এলাকায় প্রায় ২ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে করে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষ পড়েন দুর্ভোগে। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স গুলোকেও পড়তে বিড়ম্বনায়। দুপুরের পর থেকে কান্দিরপাড় এলাকায় দুই পক্ষের গোলযোগের আশঙ্কায় অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে টাউন হল মাঠে দুই গ্রুপের কর্মসূচি ঘিরে নগরীতে চাপা উত্তেজনা দেখা দেয়। দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝেও উত্তেজনা দেয়। সহিংসতা ঠেকাতে রাতেই কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষের কর্মসূচি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। মধ্যরাতে টাউন হলের প্রধান ফটকে তালা ঝোলানো হয়।
কান্দিরপাড়ের ব্যবসায়ী আবুল কালাম মজুমদার বলেন, গতকাল রাত থেকে দুই পক্ষের সমাবেশ ঘিরে বেচাকেনা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আজ দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানের সার্টার বন্ধ রাখতে হয়েছে। এতে আমাদের লোকসান গুণতে হয়েছে।
পথচারী আনজুম সুলতানা বলেন, দুই পক্ষের সমাবেশের কারণে নগরজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়ে। বাধ্য হয়ে ছোট বাচ্চা নিয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তবে সমাবেশের কারণে এখন হেঁটেও যাওয়া যাচ্ছে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক কুমিল্লার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম নতুন কুমিল্লাকে বলেন, সড়কে সভাসমাবেশ জনগণের দুর্ভোগ বাড়ায়। প্রশাসন চাইলে তা এখনই বন্ধ করতে পারবে না। এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা।
জনদুর্ভোগের বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, কুমিল্লা এমন একটি শহর কান্দিরপাড় অবরোধ করলে পুরো শহরে অবরুদ্ধ হয়ে যায়। রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আগামীতে যেন সড়কের ওপর কোনো সভা-সমাবেশ না করেন। কারণ শহরে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ জরুরি কাজে আসেন। এ ধরনের কর্মসূচি পালন করলে তাদের দুর্ভোগ বেড়ে যায়।



