কুমিল্লা
শুক্রবার,৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৩ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭
শিরোনাম:
কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন কাল, আসবেন ৫ দেশের ক্বারী যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন : হাসনাত খালেদা জিয়ার জানের সদকা ১৬টি ছাগল দান করলেন হাজী ইয়াছিন হাজী ইয়াছিনের দোয়ার আয়োজনে নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ভিক্টোরিয়া কলেজে রবীন্দ্র–নজরুল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ১৭ বছর কে কোথায় ছিল, আমরা দেখেছি: হাসনাত কুমিল্লায় ‘কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ পদ্ধতিতে অ্যাগ্রোইকোলজি উন্নয়ন’ কর্মশালা নাঙ্গলকোটে নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিজা আক্তারের যোগদান নাঙ্গলকোটে জামায়াতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ওষধ বিতরণ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কুবিতে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল

শেষ মুহূর্তে দম ফেলার সময় নেই কুমিল্লার কামারদের

টুং টাং শব্দে মুখরিত কুমিল্লার কামার পট্টি। জানান দিচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা সন্নিকটে। ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি। তাই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দিন-রাত সমান তালে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল­ার কামার শিল্পীরা।

শনিবার (১০ আগস্ট) নগরীর চকবাজার কামার পট্টিতে সরেজমিন গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। গত একমাস ধরেই তারা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দা, ছুরি, বটি তৈরি ও মেরামতের কাজ করছেন। সময় যতো ঘনিয়ে আসছে বেচা-কেনাও বাড়ছে তাদের। শেষ মুহুর্তে দম ফেলার সময় নেই কামারদের।

কুমিল্লা নগরীর বেশ কয়টি কামার রেদাকানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি দোকানে ৩/৪ জন কর্মকার কোরবানির গরু কাটার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত। শুধু তাই নয় নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল­া থেকে শুরু করে কুমিল­া মহানগরীর চকবাজার, রানীর বাজার, পদুয়ার বাজার, চৌয়ারা বাজার এবং জেলার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, বরুড়া, সদর দক্ষিণ, চান্দিনা, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, দাউদকান্দি, হোমনা, তিতাস ও মেঘনা উপজেলার কামার শিল্পীদের একই দৃশ্য।

মূল্য তালিকায় জানা যায়, পুরনো দা, বটি ঝালাই দিতে মজুরি ৪০ থেকে ১২৫ টাকা। গরু জবাইয়ের বড় ছুরি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা, চাপাতি পাওয়া যায় ৩০০ থেকে ৮০০টাকার মধ্যে। নিজেরা লোহা সরবরাহ করলে মজুরি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, প্রতি পিস বটি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, দা ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা।

চকবাজার কামার পট্টিতে নূর উদ্দিন মজুমদার নামে এক ক্রেতা নতুন কুমিল্লা.কমকে জানান, অন্যান্য বারের তুলনায় এবছর কোরবানির গরু কাটার সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। গত বছর গরু জবাইয়ের বড় ছুরি ক্রয় করেছি ৪০০ টাকায়। এ বছর এইক ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা।

রাখাল কর্মকার নামের এক ব্যবসায়ী নতুন কুমিল্লা.কমকে জানান, কামার শিল্পীদের দৈনিক মুজুরি ও ভাল লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরু কাটার সরঞ্জাম।

চকবাজার কামার পট্টিসহ প্রতিটি দোকানে এখন দৈনিক গড়ে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ মৌসুমে প্রতি দোকান মালিক প্রায় লাখ টাকার মতো আয় করবেন। আর কামার শিল্পীরা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা রোজগার করেন বলে জানা যায়। সারা বছর কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা তেমন না দেখা গেলেও, কোরবানির ঈদ এলে ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেক বেশি।

একাধিক কামার শিল্পীদের সাথে কথা বলে নতুন কুমিল্লা.কমকে জানা যায়, সারা বছর মাংস কাটার দা, বটি, ছুরি, চাপাতি প্রভৃতি বিক্রি করে যে ব্যবসা হয়, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ব্যবসা হয় কোরবানির ঈদ।

উত্তম কর্মকার নামে কামার শিল্পী নতুন কুমিল্লা.কমকে জানান, এ কাজ তারা ব্রিটিশ আমল থেকে বংশানুক্রমে করে আসছেন। এ পেশায় বর্তমানে যারা রয়েছে বেশিরভাগই বাপ-দাদার ব্যবসা হিসেবে বেছে নেন তাদের সন্তানেরা।

তবে রঞ্জিত বাবু নামে আরেক কামার শিল্পী জানালেন ভিন্ন কথা, বর্তমানে এই পেশাটি অনেকটা মৌসুমি হয়ে গেছে। যার কারণে অনেকে পেশাটি ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

আরও পড়ুন