কুমিল্লা–৬ (সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি কর্পোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের দলীয় মনোনয়ন দাবিতে অনুসারীদের সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ সমাবেশ, মশাল মিছিল এবং অবশেষে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হয়। এতে নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ শত শত সাধারণ মানুষ অংশ নিচ্ছেন। একই সঙ্গে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, পাড়া–মহল্লা পর্যায়েও গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে।
এর আগে হাজী ইয়াছিনকে মনোনয়নের দাবীতে গত ৩ নভেম্বর রাতে মহাসড়ক অবরোধের মধ্য দিয়ে এ আন্দোলনের সূচনা হয়। ৪ নভেম্বর কান্দিরপাড়সহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ৫ নভেম্বর নারী সমর্থকদের উদ্যোগে নারীদের সমাবেশ, ৬ নভেম্বর নফল রোজা রেখে গণ–ইফতার, ৭ নভেম্বর জুমার নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মিলাদ আয়োজন, ৮ নভেম্বর পূর্বালী চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি, ৯ নভেম্বর কারা–নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন এবং ১০ নভেম্বর স্থানীয় তরুণদের উদ্যোগে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়। ১১ নভেম্বর নবম দিনে অনুষ্ঠিত হয় মশাল মিছিল। আর ১২ নভেম্বরের দশম দিনে শুরু হয়েছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।
গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ৬০ ঊর্ধ্ব আবদুল আউয়াল এক ব্যক্তি বলেন, হাজী ইয়াছিন কুমিল্লার গণমানুষের নেতা। সুখে-দু:খে সবসময় তাকে পাওয়া যায়। তিনি কুমিল্লার বিএনপির কান্ডারি। তাকে মনোনয়ন না দিয়ে, উড়ে এসে জুড়ে বসা একজনকে দলীয় প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে। যাকে কুমিল্লা-৬ আসানের মানুষ অতিতে কখনো দলীয় কোন কর্মসুচিতে দেখেননি এবং সাধারণ মানুষ ঠিকমতো তাকে চিনেও না। দলের নীতি নির্ধারক তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ থাকবে হাজী ইয়াছিনকে দলীয় মনোনয়নে বিবেচনা করবেন।
কহিনুর আক্তার নামে এক নারী বলেন, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার ভাইয়ের নামে অন্যায় ভাবে ২২টি মামলা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বিএনপি সমর্থনের কারণে আমাদের পুরো পরিবার নানা নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ওই সময়ে তিনি মামলা থেকে শুরু করে পরিবারের সকল ভরণ-পোষণ চালিয়েছেন। আপনা খোঁজ নিয়ে দেখন এই রকম অগণিত নেতাকর্মীদের পরিবারের পাশে ছিলেন বিগত ১৭ বছর। আজ তাকে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা অত্যান্ত দুঃখ জনক।
মহানগর ছাত্রদল নেতা রবিন খাঁন বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। গণস্বাক্ষর অভিযান শেষে স্বাক্ষরসমূহ কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠানো হবে এবং প্রয়োজনে দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানেএকই ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করা হবে।
যুবদল নেতা মনছুর নিজামী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানাচ্ছি। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা নেই, আছে কেবল তৃণমূলের আকাঙ্ক্ষা ও ভালোবাসা। এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচি আসলে তৃণমূলের গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের অংশ। তাঁরা বিশ্বাস করেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জনগণের এই স্পষ্ট বার্তা উপেক্ষা করবে না। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে রাজপথে লড়াই করে যাচ্ছেন হাজী ইয়াছিন। তিনি একজন সৎ, ত্যাগী কর্মীবান্ধব নেতা। তাঁকে মনোনয়ন না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।



